কম্পিউটারের প্রধান উপাদান গুলি কি কি? হার্ডওয়্যার (Hardware) ও সফটওয়্যার (Software) কি? শ্রেণীবিভাগ।

কম্পিউটারের প্রধান উপাদান গুলি কি কি?

যে কোনো জিনিস তৈরি হতে গেলে তার কিছু উপাদান বা মেটিরিয়াল (Material) এর প্রয়োজন হয়। যেমন একটি বাড়ী তৈরি করতে গেলে ইট, বালি, সিমেন্ট ইত্যাদি লাগে, একটি পড়ার বই তৈরি হতে গেলে কাগজ লাগে ও সেই বইয়ের জন্য উপযুক্ত লেখা লাগেসেইরকম একটি কম্পিউটার তৈরি হতে গেলে তার কিছু উপাদান লাগে। কম্পিউটারের যে প্রধান দুটি উপাদান নিয়ে তৈরি হয় অর্থাৎ কম্পিউটার এর প্রধান দুটি উপাদান হল হার্ডওয়্যার (Hardware) এবং সফটওয়্যার (Software)সেইকারণে কম্পিউটারের উপাদান গুলিকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে –

১. হার্ডওয়্যার (Hardware)

২. সফটওয়্যার (Software)

একটি ব্যবহার উপযোগী কম্পিউটার তৈরি করতে গেলে এই হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার উপাদান দুটি আবশ্যকীয়। একটি কম্পিউটার সিস্টেম হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার সমন্বয়ে পরিচালিত হয় সফটওয়্যার ছাড়া কম্পিউটারের কোনো হার্ডওয়্যারকে কাজে লাগানো যায় না, সফটওয়্যারের সাহায্যেই হার্ডওয়্যার গুলি পরিচালিত হয়। সেইরকম হার্ডওয়্যার গুলি না থাকলে সফটওয়্যার গুলিকে কাজে লাগানো যায় না, হার্ডওয়্যার এর ওপরে সফটওয়্যার প্রয়োগ করে হার্ডওয়্যার বা কম্পিউটার এর বিভিন্ন যন্ত্রাংশ গুলিকে কাজের উপযোগী করে তোলা হয়। অর্থাৎ আমরা বুঝতেই পারছি যে, হার্ডওয়্যার না থাকলে যেমন সফটওয়্যার এর কোনো গুরুত্ব নেই, সেইরকম সফটওয়্যার না থাকলে হার্ডওয়্যার অচল। বলতে পারি যে, কম্পিউটার এর প্রধান উপাদান (Hardware এবং Software) দুটি একে-অপরের ওপর নির্ভরশীল এবং একে-অপরের সঙ্গে জড়িত।

এখন আমরা দেখবো হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার কি?

১. হার্ডওয়্যার (Hardware) – প্রথম প্রজন্মের কম্পিউটার আবিষ্কারের সময় থেকে আজ পর্যন্ত কম্পিউটারের বিবর্তনের ফলে উন্নত ধরনের কম্পিউটার সিস্টেম তৈরি করার লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরনের উন্নত যন্ত্রাংশ তৈরি করা হয়েছে, যেমন-কীবোর্ড, মাউস, মনিটর, র‍্যাম, প্রসেসর, মাদার বোর্ড, হার্ড ডিস্ক ইত্যাদি, এই যন্ত্রাংশ গুলিকেই বলা হয় হার্ডওয়্যার। অর্থাৎ হার্ডওয়্যার এর সঙ্গা হিসাবে আমরা বলতে পারি – “যে সমস্ত যন্ত্রাংশ দ্বারা কম্পিউটার সিস্টেম তৈরি হয় এবং যেগুলি ধরা-ছোঁয়া যায়, তাদের হার্ডওয়্যার বলে”।

১. সফটওয়্যার (Software) – কম্পিউটার তৈরির সময় থেকে আজ পর্যন্ত কম্পিউটারের বিবর্তনের ফলে বিভিন্ন ধরনের উন্নতমানের যন্ত্রাংশ তৈরি হয়েছে, যেমন-কীবোর্ড, মাউস, মনিটর, র‍্যাম, C.P.U, স্পিকার ইত্যাদি, এই হার্ডওয়্যার-গুলি নিজে নিজে কাজ করতে পারে না। এই হার্ডওয়্যার গুলিকে পরিচালনা করার জন্য কিছু তথ্য বা নির্দেশাবলী (Program) প্রয়োজন। সফটওয়্যার ছাড়া কম্পিউটার সিস্টেম অচল। অর্থাৎ “যে তথ্য বা নির্দেশাবলী দ্বারা কম্পিউটার সিস্টেমের হার্ডওয়্যার গুলি পরিচালিত হয় এবং যেগুলি ধরা-ছোঁয়া যায় না, তাদের সফটওয়্যার বলা হয়” যেমন-অপারেটিং সিস্টেম (Operating System), পেইন্ট (Paint), WordPad, Notepad, MS-Word, MS-Excel, Photoshop, Bangla Word ইত্যাদি।

Hardware and Software // Classification of Software

ব্যবহার ও কাজের উপর ভিত্তি করে কম্পিউটার সফটওয়্যার কে তিন ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। যথা –

১. সিস্টেম সফটওয়্যার (System Software)

২. অ্যাপ্লিকেশান সফটওয়্যার (Application Software)

৩. ইউটিলিটি সফটওয়্যার (Utility Software)

 

সিস্টেম সফটওয়্যার কে দুই ভাগে ভাগ করা হয়।

(১) অপারেটিং সিস্টেম (উদাহরণ – MS-DOS, Windows, LINUX ইত্যাদি।)

(২) ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসর (উদাহরণ – Editor, Translator, Linker, Loader, Debugger, Locator)

ট্রান্সলেটর (Translator) আবার তিন ধরনের হয়ে থাকে। যেমন – অ্যাসেম্বলার (Assembler), কম্পাইলার (Compiler), ইন্টারপ্রেটার (Interpreter)

 

অ্যাপ্লিকেশান সফটওয়্যার কেও দুই ভাগে ভাগ করা হয়।

(১) সফটওয়্যার প্যাকেজ (Software Package)

(২) ইউজার রিটেন সফটওয়্যার (User Written Software)

 

এখন আমরা অল্প কথার মধ্য দিয়ে জানবো সিস্টেম সফটওয়্যার, অ্যাপ্লিকেশান সফটওয়্যার ও ইউটিলিটি সফটওয়্যার কাকে বলে। পরের পোস্টে আমরা সফটওয়্যার এর সমস্ত ভাগগুলি নিয়ে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করবো।

  • সিস্টেম সফটওয়্যার কাকে বলে?

কম্পিউটারের সঙ্গে যুক্ত হার্ডওয়্যার গুলি নিজে থেকে কাজ করতে পারে না। যে সফটওয়্যার কম্পিউটার সিস্টেমকে চালাতে বা তার সমস্ত যন্ত্রাংশ গুলিকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে, তাকেই সিস্টেম সফটওয়্যার (System Software) বলে। সিস্টেম সফটওয়্যার একটি কম্পিউটার সিস্টেমকে ব্যবহার উপযোগী করে তোলে। সিস্টেম সফটওয়্যার সমগ্র কম্পিউটার সিস্টেমটিকে পরিচালনা করে। সিস্টেম সফটওয়্যার ছাড়া কম্পিউটার সিস্টেম অচল।

উদাহরণ ~ অপারেটিং সিস্টেম (Operating System) এবং ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসর (Language Processor) হল সিস্টেম সফটওয়্যারের গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ।

  • অ্যাপ্লিকেশান সফটওয়্যার কাকে বলে?

কম্পিউটার ব্যবহারকারীগণ নিজেদের প্রয়োজনে কম্পিউটারের ভাষা ব্যবহার করে যে প্রোগ্রাম বা সফটওয়্যার তৈরি করে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় কাজ সহজে সমাধান করে, সেই সফটওয়্যার গুলিকে অ্যাপ্লিকেশান সফটওয়্যার বলে। এই সফটওয়্যার কম্পিউটারের মধ্যে না থাকলেও কম্পিউটার চলতে থাকে মানে সচল থাকে।

উদাহরণ ~ MS-Word, MS-Excel, Photoshop, CorelDraw, Tally ইত্যাদি।

  • ইউটিলিটি সফটওয়্যার কাকে বলে?

যে সফটওয়্যার ব্যবহার করে কম্পিউটার সিস্টেমে ফাইল ব্যাক আপ করা, ভাইরাস মুক্ত করা, রক্ষণাবেক্ষণ, এডিটিং, ডিস্ক ফরম্যাটিং, ডিস্ক স্ক্যান (File Back Up, Virus Delete, Maintenance, Editing, Disk Formatting, Disk Scan) ইত্যাদি করা হয়ে থাকে, তাকে ইউটিলিটি সফটওয়্যার বলে।

উদাহরণ ~ Scandisk, Check disk, বিভিন্ন অ্যান্টি-ভাইরাস সফটওয়্যার (Kaspersky, Quick Heal, Norton ইত্যাদি) যেগুলি ব্যবহার করে কম্পিউটারকে ভাইরাস মুক্ত করা যায়।

Post a Comment

0 Comments