মাউস (Mouse) কী? মাউস কত প্রকার ও কি কি? মাউস কীভাবে ব্যবহার করবো?

মাউস (Mouse) কী? মাউস কে আবিষ্কার করেন?

কম্পিউটার সিস্টেমের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল মাউস (MOUSE) ১৯৬৮ (1968) সালে ডগলাস এঞ্জেলবার্ট (Douglas Engelbart) মাউস আবিষ্কার করেন। মাউস কম্পিউটারের একটি ইনপুট ডিভাইস, কারণ মাউস দ্বারা কম্পিউটার-কে কোনো নির্দেশ প্রদান করা হয়। এই ডিভাইসটি দেখতে ডিম্বাকার অনেকটা ইঁদুরের মতো, তাই ইহার নাম হয়েছে মাউস (MOUSE)MOUSE কথাটির একটি পূর্ণরূপ রয়েছে, সেটি হল – Mechanically Operated User Serial Engine. সাধারনত একটি মাউসে বামদিকে একটি বাটন, ডানদিকে একটি বাটন এবং মাঝে একটি চাকার মতো অংশ থাকে যেটি ঘোরালে ঘোরে, সেটিকে বলা হয় হুইল (Wheel) বা স্ক্রল (Scroll) বাটন। প্রত্যেকটি মাউসের নিচে একটি করে মাউস প্যাড (Mouse Pad) ব্যবহার করা হয়, যার ওপরে মাউস নাড়াচাড়া করে কম্পিউটার-কে নির্দেশ দেওয়া হয়।

What is Mouse? Uses and rules of Computer Mouse.

লেফট্ বাটন (Left Button) - মাউসের বামদিকে যে বাটনটি থাকে সেটিকে লেফট্ বাটন (Left Button) বলে, যার সাহায্যে লেফট্ ক্লিক (Left Click) বা নরমাল (Normal Click) ক্লিক করা হয়। এই লেফট্ ক্লিকের সাহায্যে মাউস পয়েন্টার দ্বারা কোনো প্রোগ্রাম বা কম্পিউটার ফাইল-ফোল্ডার ইত্যাদি ওপেন করা যায়। আবার কম্পিউটারের কোনো কোনো অ্যাপ্লিকেশান বা প্রোগ্রাম চালু করার জন্য সেই অ্যাপ্লিকেশান বা প্রোগ্রামের আইকনের ওপরে ডাবল ক্লিক (Double Click) করার প্রয়োজন হয়, তখন এই বাটনের সাহায্যেই ডাবল ক্লিক করা হয়।

রাইট বাটন (Right Button) - ডানদিকে যে বাটনটি থাকে সেটিকে রাইট বাটন (Right Button) বলে, যার সাহায্যে রাইট ক্লিক (Right Click) করা হয়। রাইট ক্লিক করার মাধ্যমে বিশেষ বিশেষ কিছু কাজ সম্পন্ন করা যায়, যেমন – কোনো ফাইল বা ফোল্ডার এর নাম পরিবর্তন করা অর্থাৎ Rename করা, ওপেন করা (ইহা লেফট্ ক্লিকে ডিরেক্ট হয়), কোনো ফাইল বা ফোল্ডারের বিষয়বস্তু দেখা অর্থাৎ Properties দেখা ইত্যাদি বিশেষ কিছু কাজ রাইট ক্লিক এর মাধ্যমে সম্পন্ন করা যায়।

হুইল বা স্ক্রলিং বাটন (Wheel or Scrolling Button) – লেফট্ বাটন এবং রাইট বাটনের মাঝে চাকার মতো বাটনটির নাম হুইল বা স্ক্রলিং বাটন। অনেকগুলি পাতা (Page) বিশিষ্ট কোনো ডকুমেন্টকে ওপরের দিকে নিয়ে যেতে বা নিচের দিকে নামাতে, জুম ইন ও জুম আউট (Zoom In, Zoom Out) করতে বা আরও অন্য কাজে চাকার মতো এই বাটনটি ব্যবহার করা হয়। চাকার মতো এই বাটনটি মাউস-এর তৃতীয় বাটন হিসাবেও কাজ করে। কীভাবে? – যখন আমরা ইন্টারনেট ব্যবহার করি তখন কোনো লিঙ্ক (Link) এর ওপরে পয়েন্টার রেখে স্ক্রল বাটন চাপলে সেই লিঙ্কটি আলাদা একটি ট্যাব (Tab)-এ খুলে যায়।

 

মাউস (Mouse) বেশ কয়েক ধরনের হয়ে থাকে

১. মেকানিক্যাল মাউস (Mechanical Mouse) – এই ধরনের মাউসের নিচের দিকে একটি গর্ত থাকে, যেখানে একটি রাবারের তৈরি বল থাকে। মাউসের মধ্যে একটি সেন্সর (Sensor) থাকে যেটি বলের নড়াচড়াকে লক্ষ্য করে কারসার (Cursor) বা মাউস পয়েন্টার (Mouse Pointer) স্ক্রীনের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে সরিয়ে নিয়ে যায়।

২. অপটিক্যাল মাউস (Optical Mouse) – এই ধরনের মাউসে বলের পরিবর্তে একটি LED থাকে, যেখান থেকে লাইট বা আলোক রশ্মি নির্গত হয়ে স্ক্রীনের কারসার বা মাউস পয়েন্টার নিয়ন্ত্রিত হয়। বর্তমানে ব্যবহৃত প্রায় সকল মাউস-ই অপটিক্যাল মাউস।

৩. কর্ডলেস বা ওয়্যারলেস মাউস (Cordless or Wireless Mouse) – নামের মধ্যেই বুঝতে পারছি যে, কর্ড বা ওয়্যার ছাড়া অর্থাৎ তার ছাড়া এক ধরনের মাউস আছে যাকে কর্ডলেস বা ওয়্যারলেস মাউস বলে। এটি অপটিক্যাল মাউসের মতোই কাজ করে, শুধুমাত্র পার্থক্য হল যে, অপটিক্যাল মাউসে কর্ড বা ওয়্যার (Cord or Wire) থাকে আর এই মাউসে থাকে না। কম্পিউটার এর সাথে কানেক্ট করার জন্য একটি ছোটো ডিভাইস (Receiver Device) ব্যবহার করা হয়, যেটি কম্পিউটার এর ইউ.এস.বি (USB) পোর্টে লাগানো হয়ে থাকে। এই মাউস-এর আর এক নাম রিমোট মাউস (Remote Mouse)

৪. ট্র্যাকবল মাউস (Trackball Mouse) – এই ধরনের মাউসে একটি বল থাকে, যেটিকে আঙুলের সাহায্যে ঘোরানোর মাধ্যমে কারসার বা মাউস পয়েন্টার নিয়ন্ত্রণ করা হয়।

 

মাউস ব্যবহারের সাধারণ নিয়মাবলী - কর্ডলেস বা ওয়্যারলেস মাউস (Cordless or Wireless Mouse) ছাড়া সমস্ত মাউস ব্যবহার করতে গেলে প্রথমে মাউসের তারটির শেষ ভাগে যে USB বা PS2 পোর্টটি থাকে সেটিকে কম্পিউটার এর USB বা PS2 পোর্টে লাগিয়ে নিতে হবে। তারপর মাউস প্যাডের ওপরে মাউস নড়াচড়ার মাধ্যমে স্ক্রীনের পয়েন্টার এদিক-ওদিক নড়াচড়া করে। এই পয়েন্টারের সাহায্যে কম্পিউটার স্ক্রীনের কোনো কিছু (যে কোনো অ্যাপ্লিকেশন)-কে পয়েন্ট করে লেফট্ ক্লিক বা রাইট ক্লিক ব্যবহার করে সেটি ওপেন, সিলেক্ট, নাম পরিবর্তন (Rename) বা ডিলিট ইত্যাদি কাজ করতে পারি। এছাড়াও মাঝে চাকার মতো বাটনটির সাহায্যে অনেক পাতার কোনো ডকুমেন্ট কে নিচে-ওপরে তোলা-নামা করতে পারি।

 

মনে রাখতে হবে -

  • মাউস একটি ইনপুট ডিভাইস।
  • ১৯৬৮ সালে ডগলাস এঞ্জেলবার্ট মাউস আবিষ্কার করেন।
  • Mouse এর সম্পূর্ণ নাম Mechanically Operated User Serial Engine.
  • মাউসের বাম দিকের বাটনটিকে লেফট্ বাটন, ডানদিকের বাটনটিকে রাইট বাটন এবং মাঝের চকার মতো বাটনটিকে হুইল বলে।
  • মাউস বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে, যেমন - মেকানিক্যাল মাউস, অপটিক্যাল মাউস, কর্ডলেস মাউস, ট্র্যাকবল মাউস ইত্যাদি।
  • কর্ডলেস মাউসকে রিমোট মাউস-ও বলা হয়।

 

এই পোস্টে আমরা মাউস সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারলাম। আরও অনেক কিছু তথ্য জানতে "ডিজিটাল কলম"-এর সাথে জুড়ে থাকুন। ধন্যবাদ।

Post a Comment

0 Comments