কম্পিউটার এর শ্রেণীবিভাগ (Classification of Computer) - বিস্তারিত

Classification of Computer
Classification of Computer



 

যুক্তিগত দিক দিয়ে কম্পিউটার কে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে –

১. অ্যানালগ কম্পিউটার, ২. ডিজিটাল কম্পিউটার, ৩. হাইব্রিড কম্পিউটার

১. অ্যানালগ কম্পিউটার : যে সমস্ত কম্পিউটার গুলি ক্রমাগত পরিবর্তনশীল ডেটা পরিমাপের জন্য ব্যবহৃত হয়, তাদের অ্যানালগ কম্পিউটার (Analog Computer) বলে। পরিমাপের ক্ষেত্রে অ্যানালগ কম্পিউটারে সঠিক ফলাফল পাওয়া যায় না।

উদাহরণ – স্লাইড রুল (Slide Rule), স্টেপড রেকনার (Stepped Reckoner)

ব্যবহার – চিকিৎসাক্ষেত্রে ECG যন্ত্রে এই ধরনের কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও বৈদ্যুতিক তারের ভোল্টেজের পরিমাপ করার জন্য, তরল ও গ্যাসীয় পদার্থের চাপের তারতম্য নির্ণয় করবার জন্য এই ধরনের কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।

২. ডিজিটাল কম্পিউটার : যে সমস্ত কম্পিউটার ডিজিটাল নির্দেশ (Digital Signal) দ্বারা অর্থাৎ 0 (OFF) ও 1 (ON) দ্বারা পরিচালিত হয়, সেই সকল কম্পিউটারকে ডিজিটাল কম্পিউটার (Digital Computer) বলে।

উদাহরণ – বর্তমানে ব্যবহৃত সকল কম্পিউটারই (ডেস্কটপ, ল্যাপটপ) হল ডিজিটাল কম্পিউটারের উদাহরণ।

ব্যবহার – সমস্ত ধরনের অফিস, চিকিৎসাক্ষেত্র, বিজ্ঞান গবেষণা, ডেটা প্রসেসিং সহ সুক্ষ ও সঠিক ফলাফল নির্ণয়ের জন্য ডিজিটাল কম্পিউটার ব্যবহৃত হয়। ডিজিটাল কম্পিউটারের ব্যবহার অর্থাৎ আধুনিক সমাজে কম্পিউটারের ব্যবহার আমরা আগের পোস্টে আলোচনা করেছি।

৩. হাইব্রিড কম্পিউটার : যে সমস্ত কম্পিউটারে অ্যানালগ এবং ডিজিটাল দুই প্রকার প্রযুক্তিই ব্যবহৃত হয় অর্থাৎ অ্যানালগ এবং ডিজিটাল দুই ধরনের গুণাবলিই বর্তমান থাকে, সেই সমস্ত কম্পিউটার গুলিকে হাইব্রিড কম্পিউটার (Hybrid Computer) বলে।

ব্যবহার – আবহাওয়া দপ্তরে হাইব্রিড কম্পিউটার অ্যানালগ পদ্ধতিতে বায়ুচাপ, তাপ ইত্যাদি পরিমাপ করে ডিজিটাল পদ্ধতিতে গণনা করে আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া, চিকিৎসাক্ষেত্রে নির্ভুল রোগনির্ণয় ইত্যাদি কাজে এই ধরনের কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।

 

আকৃতিগত দিক দিয়ে কম্পিউটার কে চারভাগে ভাগ করা হয়েছে –

১. সুপার কম্পিউটার, ২. মেইনফ্রেম কম্পিউটার, ৩. মিনি কম্পিউটার, ৪. মাইক্রো কম্পিউটার।

১. সুপার কম্পিউটার : এই ধরনের কম্পিউটার সবচেয়ে বড়, শক্তিশালী এবং দামী। এছাড়াও উচ্চগতিসম্পন্ন ও তথ্য ধারণ ক্ষমতা অনেক বেশি। বৈজ্ঞানিক কাজকর্মে এই সুপার কম্পিউটার (Super Computer) এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

২. মেইনফ্রেম কম্পিউটার : সুপার কম্পিউটার থেকে অপেক্ষাকৃত কম ক্ষমতা সম্পন্ন এবং সুপার কম্পিউটার থেকে আকারে ছোটো এই মেইনফ্রেম কম্পিউটার (Mainframe Computer)এই ধরনের কম্পিউটার দ্রুতগতিতে বিভিন্ন জটিল গাণিতিক ও বৈজ্ঞানিক সমস্যার সমাধান করতে পারে এবং একসাথে একাধিক ব্যবহারকারী কম্পিউটার ব্যবহার করতে পারে অর্থাৎ সুপার কম্পিউটারের মতো মেইনফ্রেম কম্পিউটার Multi User System-এ চলে।

৩. মিনি কম্পিউটার : এই ধরনের কম্পিউটার অন্যান্য সাধারন কম্পিউটার থেকে আকারে ছোটো। সুপার কম্পিউটার ও মেইনফ্রেম কম্পিউটার –এর মতো মিনি কম্পিউটার (Mini Computer) –ও মাল্টি ইউজার কম্পিউটার অর্থাৎ একসাথে একাধিক ব্যবহারকারী কম্পিউটার ব্যবহার করতে পারে। IBM কোম্পানি মেইনফ্রেম কম্পিউটার থেকে ছোটো মাঝারি ধরনের এই মিনি কম্পিউটার তৈরি করে। ব্যাবসায়িক ও কারিগরি বিদ্যাই ইহা বেশি ব্যবহার করা হয়।

৪. মাইক্রো কম্পিউটার : সমস্ত ধরনের কম্পিউটার থেকে অনেকটাই ছোটো ও দামে সস্তা এবং দৈনন্দিন জীবনে সাধারন কাজের জন্য ব্যবহৃত কম্পিউটার টির নাম মাইক্রো কম্পিউটার (Micro Computer)এই ধরনের কম্পিউটারে মাইক্রোপ্রসেসর ব্যবহার করা হয় যা সি.পি.ইউ (Central Processing Unit) এর কাজ করে। মাইক্রো কম্পিউটার সিস্টেমকে সাধারনত দুই ভাগে ভাগ করা হয় – ১. পার্সোনাল কম্পিউটার ২. পোর্টেবল কম্পিউটার।

১. পার্সোনাল কম্পিউটার – বর্তমানে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত কম্পিউটার হল পার্সোনাল কম্পিউটার (Personal Computer)ইহা বিভিন্ন অফিসিয়াল কাজকর্মে, বিভিন্ন দৈনন্দিন কাজ (গান শোনা, সিনেমা দেখা, ইন্টারনেট সার্ফিং, গেম খেলা), পড়াশোনা ইত্যাদি কাজে ব্যবহার করা হয়।

২. পোর্টেবেল কম্পিউটার – পার্সোনাল কম্পিউটার এর আকার পরিবর্তন করে সহজেই বহনযোগ্য যে কম্পিউটার তৈরি করা হয়েছে, তাই হল পোর্টেবল কম্পিউটার (Portable Computer)পোর্টেবল কম্পিউটার বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে, যেমন- ল্যাপটপ (Laptop), পামটপ (Palmtop), নোটবুক (Notebook), পেন বেসড কম্পিউটার (Pen Based Computer)

_______________

কম্পিউটার সম্পর্কে আরও কিছু জানতে ও পড়তে ডিজিটাল কলমে চোখ রাখুন। ধন্যবাদ!

Post a Comment

0 Comments