প্রাইমারি মেমোরী (Primary Memory) বা মেইন মেমোরী (Main Memory) ~
আগের পোস্টে আমরা মেমোরী কাকে বলে এবং তার শ্রেণীবিভাগ গুলি দেখেছি। এখন আমরা শ্রেণীবিভাগ গুলির মধ্যে প্রাইমারি মেমোরী সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
প্রাইমারি মেমোরী হল সি.পি.ইউ (CPU)-এর সঙ্গে যুক্ত একধরনের অস্থায়ী মেমোরী। যেখানে কম্পিউটার সিস্টেমের ইনপুট ডিভাইস থেকে আসা তথ্য জমা হয় এবং সেই তথ্যগুলি প্রসেসরে দ্রুত আদান প্রদান হয় অর্থাৎ এই প্রাইমারি মেমোরীতে তথ্য বা নির্দেশ খুব দ্রুত আদান প্রদান হয়। প্রথমেই বলেছি যে প্রাইমারি মেমোরী অস্থায়ী মেমোরী তার কারণ হল এই মেমোরীতে কোনো তথ্য স্থায়ীভাবে জমা অর্থাৎ সঞ্চিত থাকে না, বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলে এই মেমোরীতে থাকা তথ্য মুছে যায়। এই মেমোরীর ধারণ ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে কম। প্রাইমারি মেমোরী মেইন মেমোরী (Main Memory) নামেও পরিচিত। প্রাইমারি মেমোরী সাধারনত দুই ধরনের হয়ে থাকে – RAM এবং ROM. ওপরের চিত্রে ভাগ গুলি সুন্দর ভাবে দেখানো আছে।
RAM (Random Access Memory) ~ ইহা একধরনের প্রাইমারি মেমোরী। RAM বা Random Access Memory হল অস্থায়ী মেমোরী, অর্থাৎ বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলে এই মেমোরীতে থাকা তথ্য সম্পূর্ণরূপে মুছে যায়, এই কারনে এই মেমোরীকে ভোলাটাইল মেমোরী (Volatile Memory) বলে। ইনপুট ডিভাইস থেকে আগত তথ্য বা নির্দেশ প্রথমে RAM-এ জমা হয়, ব্যবহারকারী এই নির্দেশ বা তথ্য সরাসরি পড়া ও লেখা উভয়ই করতে পারে। কম্পিউটার সিস্টেমে র্যাম (RAM) ছাড়া কোনো তথ্য বা নির্দেশ পড়া বা লেখা যায় না। RAM দুই প্রকারের হয়ে থাকে। (a) Static RAM, (b) Dynamic RAM.
Static RAM ~ Static RAM (স্ট্যাটিক র্যাম) বা SRAM ট্রানজিস্টার (Transistor) প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি। এই র্যামের ধারণ ক্ষমতা কম হলেও এই র্যাম দ্রুতগামী অর্থাৎ ডেটা Access করতে অনেক কম সময় নেয়। এই র্যামের জন্য বিদ্যুৎ খরচ বেশী হয় এবং দামও তুলনামূলক বেশী। তথ্য সংরক্ষণের জন্য এই র্যামকে রিফ্রেশ (Refresh) করার দরকার হয় না। এই ধরনের র্যাম অর্থাৎ Static RAM খুব অল্প পরিমান কম্পিউটারে ব্যবহৃত হয়।
Dynamic RAM ~ Dynamic RAM (ডায়নামিক র্যাম) বা DRAM ক্যাপাসিটর (Capacitor) প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি। এই র্যামের ধারণ ক্ষমতা বেশী। ইহা ধীর গতির র্যাম অর্থাৎ ডেটা Access করতে বেশ কিছু সময় নেয়। এই র্যামের দাম তুলনামূলক কম। বর্তমানে Dynamic RAM বেশী ব্যবহৃত হয়। ক্যাপাসিটর খুব তাড়াতাড়ি ইলেকট্রিক চার্জ হারায় ফলে এই র্যামে থাকা তথ্য ফেড হয়ে যায়। সেই কারনে এই মেমোরী কে রিফ্রেশ (Refresh) করার দরকার হয়।
ROM (Read Only Memory) ~ ROM প্রাইমারী মেমোরীর উদাহরণ হলেও ইহা একধরনের স্থায়ী মেমোরী, অর্থাৎ বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ হয়ে গেলেও এই মেমোরীতে থাকা তথ্য মুছে যায় না, তাই একে নন-ভোলাটাইল মেমোরী (Non Volatile Memory) বলে। মনে রাখা দরকার, রমে থাকা তথ্য শুধুমাত্র পড়া যায়, লেখা যায় না। ROM সাধারনত চার ধরনের হয়ে থাকে –
PROM (Programmable Read Only Memory) ~ এই মেমোরীতে অর্থাৎ PROM-এ কোনো প্রোগ্রামের নিজের প্রয়োজন মতো তথ্য লোড হয়। একবার লোড হওয়া তথ্য মোছা যায় না শুধু মাত্র পড়া যায়।
EPROM (Erasable Programmable Read Only Memory) ~ এই মেমোরীতেও অর্থাৎ EPROM-এ কোনো প্রোগ্রামের নিজের প্রয়োজন মতো তথ্য লোড হয়। এতে লোড হওয়া তথ্য পড়া তো যায়ই, মুছে ফেলাও সম্ভব। অতিবেগুলি রস্মি (Ultraviolet Ray)-এর সাহায্যে এই রমে থাকা তথ্য মুছে ফেলা যায়।
EEPROM (Electrically Erasable Programmable Read Only Memory) ~ ইহাতেও প্রোগ্রামের নিজের প্রয়োজন মতো তথ্য লোড হয়। EEPROM-এ সঞ্চিত তথ্য বিদ্যুৎ প্রবাহের মাধ্যমে অর্থাৎ Electrically মুছে ফেলা যায়। এই রমে থাকা সমস্ত তথ্য একবারেই মুছে ফেলতে হয়, বার বার বেছে বেছে তথ্য মোছা সম্ভব নয়। এই রমের আয়ু কম ফলে বেশিবার তথ্য মোছা বা পুনরায় সঞ্চয় করা সম্ভব নয়।
UVPROM (Ultra Violet Programmable Read Only Memory) ~ এই রমে থাকা তথ্য গুলিকে অতিবেগুলি রশ্মির সাহায্যে মুছে ফেলা হয় এবং পুনরায় প্রয়োজনে তথ্য লোড বা সঞ্চয় করা যায়।
0 Comments