কম্পিউটার এর প্রজন্ম (Generations of Computers)

কম্পিউটার এর প্রজন্ম // Generation of Computer - ডিজিটাল কলম

    কম্পিউটার এর জন্ম থেকে আজ পর্যন্ত দীর্ঘ সময় ধরে বিভিন্ন যন্ত্রাংশ তৈরি, যন্ত্রাংশ গুলির ব্যবহার, সেই যন্ত্রাংশ গুলির উন্নতি সাধন করে নতুন নতুন বৈশিষ্ট্য প্রদান করে উন্নতমানের যন্ত্রাংশ তৈরি করা – এইভাবে আজকের যুগে চলতে থাকা আধুনিক কম্পিউটার গুলি সৃষ্টি হয়েছে। কম্পিউটার এর উৎপত্তি থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত কম্পিউটার এর উন্নতি সাধনের বা কম্পিউটার এর এই বিবর্তনের দীর্ঘ সময়কে বেশ কয়েকটি প্রজন্মে (Generation) ভাগ করা হয়েছে।

প্রথম প্রজন্ম (First Generation) :

সময়কাল – ১৯৪৫ থেকে ১৯৫৬

ব্যবহৃত যন্ত্রাংশ – ভ্যাকুয়াম টিউব (Vacuum Tube)

সুবিধা – ১. এই প্রজন্মে কম্পিউটার এর গঠন ছিল সরল প্রকৃতির

অসুবিধা – ১. এই প্রজন্মে কম্পিউটার এর গঠন অনেক বড় ছিল ফলে বহনযোগ্য ছিল না।

২. এই প্রজন্মের কম্পিউটার এর ফলাফল (Output) এর ওপরে বিশ্বাস কম ছিল।

৩. অত্যধিক তাপ উতপন্ন হওয়ায় শীততাপ নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজন হত।

৪. এই প্রজন্মের কম্পিউটারে গতি অনেক কম ছিল।

দ্বিতীয় প্রজন্ম (Second Generation) :

সময়কাল – ১৯৫৭ থেকে ১৯৬৪

ব্যবহৃত যন্ত্রাংশ – ট্রানজিস্টার

সুবিধা – ১. প্রথম প্রজন্মের তুলনায় এই প্রজন্মের কম্পিউটার গুলি আকারে ছোটো ছিল।

২. এই প্রজন্মের কম্পিউটার গুলির ফলাফলের ওপর বিশ্বাস করা যেত।

৩. কম তাপ উতপন্ন হত এবং দ্রুতগতিতে কাজ করতে পারতো।

৪. দ্বিতীয় প্রজন্মের কম্পিউটার গুলিতে প্রথম প্রজন্মের তুলনায় বিদ্যুৎ খরচ কম হত।

৫. বহনযোগ্য ছিল।

অসুবিধা – ১. এই প্রজন্মের কম্পিউটার গুলি প্রথম প্রজন্মের তুলনায় গঠন ছিল জটিল।

২. কম হলেও তাপ উৎপন্ন হত, তাই শীততাপ নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজন ছিল এবং রক্ষনাবেক্ষনেরও প্রয়োজন ছিল।

তৃতীয় প্রজন্ম (Third Generation) :

সময়কাল – ১৯৬৫ থেকে ১৯৭৪

ব্যবহৃত যন্ত্রাংশ – ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট (Integrated Circuit বা IC)

সুবিধা – ১. আগের প্রজন্ম গুলির তুলনায় এই প্রজন্মের কম্পিউটার গুলি আকারে ছোটো ছিল।

২. তৃতীয় প্রজন্মের কম্পিউটার গুলি বিশ্বাসযোগ্য ফলাফল প্রদান করত।

৩. আগের প্রজন্মের তুলনায় আকারে ছোটো হওয়ায় জন্য বহনযোগ্য ছিল।

৪. কম পরিমান তাপ উৎপন্ন হত এবং বিদ্যুৎ খরচ কম ছিল।

অসুবিধা – ১. আগের প্রজন্মের তুলনায় কম্পিউটারের গঠন জটিল।

২. কম হলেও তাপ উৎপন্ন হত বলে শীততাপ নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজন ছিল।

চতুর্থ প্রজন্ম (Fourth Generation) :

সময়কাল – ১৯৭৫ থেকে ১৯৮৪

ব্যবহৃত যন্ত্রাংশ – লার্জ স্কেল ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট বা LSIC (Large Scale Integrated Circuit) এবং ভেরি লার্জ স্কেল ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট বা VLSIC ( Very Large Scale Integrated Circuit)

সুবিধা – ১. এই প্রজন্মের কম্পিউটার গুলি আকারে অনেক ছোটো ছিল এবং সহজে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে বহন করা যেত।

২. আগের প্রজন্ম গুলির তুলনায় এই প্রজন্মের কম্পিউটার গুলি থেকে নির্ভরযোগ্য ফলাফল প্রদান করত।

৩. শীততাপ নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজন ছিল না এবং বিদ্যুৎ খরচ কম ছিল।

৪. এই প্রজন্মের কম্পিউটার গুলিতে তথ্য সঞ্চয়ের ক্ষমতা অনেক বেশি ছিল।

৫. একসঙ্গে অনেকগুলি উদ্দেশ্য সফল করা যেত।

অসুবিধা – ১. কম্পিউটার গুলির গঠন তুলনামূলক ভাবে জটিল ছিল।

২. এই প্রজন্মের কম্পিউটার গুলির জন্য উন্নত প্রজুক্তি ও উন্নতমানের সফটওয়্যার এর প্রয়োজন ছিল।

পঞ্চম প্রজন্ম (Fifth Generation) :

সময়কাল – ১৯৮৫ থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত

ব্যবহৃত যন্ত্রাংশ – আলট্রা লার্জ স্কেল ইন্টিগ্রেশন বা ULSI (Ultra Large Scale Integration) IC.

সুবিধা – ১. আকারে অনেক ছোটো হওয়ায় এক স্থান থেকে অন্য স্থানে সহজে নিয়ে যাওয়া সম্ভব।

২. কম্পিউটার গুলি দ্রুতগতি সম্পন্ন এবং একসঙ্গে অনেকগুলি কাজ একসাথে করতে সক্ষম।

৩. সঠিক ফলাফল প্রদান করতেও সক্ষম।

৪. শীততাপ নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজন নেই।

৫. ইন্টারনেট (Internet), মাল্টিমিডিয়া (Multimedia) ইত্যাদি ব্যবহারের ফলে সার্বিকভাবে কম্পিউটার গুলি আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে।

৬. এই প্রজন্মের কম্পিউটার গুলিতে নিজস্ব বুদ্ধিমত্তা (Artificial Intelligence) প্রয়োগ করা সম্ভব হয়েছে।

অসুবিধা – ১. এই প্রজন্মের কম্পিউটার গুলির গঠন খুবই জটিল।

 

এই হল কম্পিউটার এর জেনারেশন বা কম্পিউটার এর প্রজন্ম (Computer Generation)নিশ্চয়ই এটি তোমাদের / আপনাদের কাজে লেগেছে বা ভবিষ্যতেও লাগবে। এই রকম কম্পিউটার সম্পর্কে আরও তথ্য জানতে বা পড়তে “ডিজিটাল কলম”-এ চোখ রাখো / রাখুন। নিচের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে এবং বন্ধুদের সাথে শেয়ার (Share) করে বন্ধুদেরও পড়তে সাহায্য করুন এবং “ডিজিটাল কলম”-কে উৎসাহিত করুন। ধন্যবাদ।

Post a Comment

0 Comments